প্রবেশপথের সামনে সহাস্যে দাঁড়িয়ে আছে এক তরুণী। তার কাঁধ পর্যন্ত সোনালি চুল। হালকা বাতাসেও চুলগুলো অবিন্যস্ত হয়ে পড়ছে। পরনে সোনাপাতি ফুলের পাপড়ির মতো একটি টি-শার্ট আর নীল জিনসের হাফপ্যান্ট। টি-শার্টের গায়ে প্রজাপতির ছবি। আমাদের দেখে মিষ্টি এবং মৃদু হেসে বলল, আমার নাম সুসানা। প্রজাপতির বাংলোয় তোমাদের স্বাগত।
নিজের নাম বলে অভ্যর্থনা জানানোর এমন ভঙ্গি খুবই আন্তরিক। ধন্যবাদ বলে আমরা ঢুকতে চাইলাম ভেতরে। কিন্তু হাত দুটি নেড়ে মেয়েটি বলল, ‘দয়া করে একটু অপেক্ষা করতে হবে। ভেতরে ইতিমধ্যে ২৫ জন পর্যটক ফুলের গন্ধ আর প্রজাপতির মায়ায় মোহিত হয়ে আছে। এর বেশি মানুষ হলে প্রজাপতিগুলো বিরক্ত হতে পারে। ওদের স্বাস্থ্যের জন্য ব্যাপারটা ভালো নয়। এ কারণে ২৫ জনের বেশি মানুষের প্রবেশে অনুমোদন নেই। বাধা দেওয়ার জন্য আমি দুঃখিত।’
ঢুকতে পারিনি, তাতে বরং ভালো লাগছে। অপেক্ষার সময়টুকু আলাপ জমানো যাবে। বললাম, ‘অপেক্ষা ভালোই লাগে, তোমার মতো স্মার্ট বিনয়ী ও সুন্দরীর সঙ্গে কথা বলতে বলতে সময়টা নিশ্চয় খুব দ্রুত শেষ হয়ে যাবে।’
হি হি হি করে হেসে উঠল সে। মনে হলো আশপাশের ঘন গাছের আড়াল থেকে রঙিন পালকের একটা পাখি হঠাৎ ডেকে আকাশের দিকে উড়াল দিয়েছে। হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললাম, ‘দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশ থেকে এসেছি। তুমি কি আমার দেশের নাম শুনেছ?’
সে বলল, ‘হ্যাঁ, আমার প্রতিবেশী একজন বাঙালি। তোমাদের উৎসব, ধর্ম—এগুলো সম্পর্কে আমি জানি।’
বেশ কৌতূহল হলো, কী জানে সে আমার দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে? কিন্তু ওর পেশার কাজে বিঘ্ন ঘটবে বলে কথা বাড়ালাম না। শুধু বললাম, ‘তোমার বাড়ি কোথায়?’
সে বলল, ‘এই বেলমন্টেই। র্যানকিন হ্রদের ধারে। নর্থ ক্যারোলাইনার ব্যস্ত শহর শার্লটের কাছে পাহাড়ি এই শহরতলি বাংলাদেশের রাঙামাটির মতো। চারদিকে ছোট-বড় হ্রদের ছড়াছড়ি। তীরে তীরে সব ঘরবাড়ি।’ বললাম, ‘আমাদের বাড়ির কাছেই।’
সুসানা আমার কথার কোনো জবাব না দিয়ে বলল, ‘এবার তোমরা ভেতরে যেতে পারো। কয়েকজন বেরিয়ে গেছে।’
বললাম, ‘তুমি যাবে না?’
মিষ্টি হেসে বলল, ‘না, ভেতরে আরেকজন আছে, যদি কোনো জিজ্ঞাসা থাকে, তবে সে জানিয়ে দেবে।’
ঘাড় ফিরিয়ে তার দিকে তাকিয়ে প্রজাপতির রাজ্যে ঢুকে গেলাম। এত ফুল, এত সৌরভ দেখে মনে হলো যেন সহস্র মুখের হাসি একসঙ্গে জড়ো হয়ে পৃথিবীটাকে মুখর করে রেখেছে। কোথাও উড়ছে, কোথাও ফুলের পাপড়িতে বসে আছে, কোথাও শুকনো ডালে বসে পাখা দুটো জড়ো করে চুপচাপ ঘুমিয়ে রয়েছে প্রজাপতিগুলো। এটা যেন কাচ দিয়ে ঘেরা রূপকথার জগৎ। একটা ছোট গাছের সামনে উবু হয়ে দেখছিলাম একটা প্রজাপতি। চারদিকে কালো আর মাঝখানটা টুকটুকে লাল। এমন সময় ‘হাই’ বলে কে যেন আমাকে ডাক দিল। দেখি সুসানা। আমার মুখে প্রশ্নবোধক চিহ্ন।
সে বলল, ‘তোমার জন্য চলে এলাম। মনে হলো তুমি আমার গাইড বেশি পছন্দ করবে। কোনো সমস্যা নেই। এটা আমার চাকরি। তুমি যে প্রজাপতিটা দেখছ, সেটি রেড লেসউইং।’
তারপর এটির বৈজ্ঞানিক নাম কী, এদের স্বভাব কী—সব বলতে শুরু করল। ওর কথাগুলো আমার কানে যাচ্ছিল না। ভাবনাগুলো তখন প্রজাপতির মতো ডানা মেলে অন্য কোথাও উড়ে যাচ্ছিল। শুধু তার মুখের দিকে তাকিয়েই ছিলাম। তা ছাড়া দ্রুত ইংরেজি বলার ধরনে তার উচ্চারিত অনেক শব্দ অর্থহীন হয়ে বাতাসে ফুলের সৌরভের মতো ভাসছিল। সে হঠাৎ কথা করে বন্ধ করে জিজ্ঞাসা করল, ‘কী হলো? এনিথিং রং?’
সংবিৎ ফিরে পেয়ে বললাম, ‘তোমার কথা শুনতে শুনতে অবাক হচ্ছিলাম। তুমি এত কিছু জানো কী করে?’
‘না না, আমারগুলো একেবারেই প্রাথমিক জ্ঞান। চাকরি বাঁচানোর জন্য এগুলো তো জানতে হবে। তোমার কিছু জানার আছে?’
এখানকার প্রজাপতি আর মানুষটির সৌন্দর্য দেখেই মুগ্ধ আমি। কিছুই জানার আগ্রহ আমার আর নেই। সেটা বলা ঠিক হবে না হয়তো। কিন্তু আমার বেশ জানার আগ্রহ আছে এমন ভাবটি করে বললাম, ‘তোমাদের দেশে যত ধরনের প্রজাপতি আছে, তার সব কি এখানে আছে?’
‘অসম্ভব’ বলে সে প্রায় চিৎকার করে উঠে বলল, ‘না না, তা কী করে সম্ভব! সারা পৃথিবীতে যে ২০ হাজার প্রজাতির প্রজাপতি আছে, তার বেশির ভাগ যুক্তরাষ্ট্রের নানা অঙ্গরাজ্যে রং ছড়ায়।’
বোকার মতো প্রশ্ন করায়, সে মনে হয় একটু হতাশ হলো। নিজের মূর্খতাকে ঢাকতে গিয়ে হেসে বললাম, ‘তোমার সঙ্গে তামাশা করছি সুসানা। আমার জন্মস্থান বন্দরনগর চট্টগ্রামে। সেখানে সাগরের পাশে এর চেয়ে অনেক বড় প্রজাপতি পার্ক আছে।’
‘আমাদের পার্কটা এটার মতো বড় আর গোছানো নয়।’ মিথ্যা বললাম।
কী যেন এক মায়ায় ঘোরগ্রস্ত হয়ে বের হতে হতে জানতে চাইলাম, ‘এই উদ্যানে আর কী কী দেখার আছে?’
সুসানা বলল, ‘প্রজাপতির বাংলো এই বিশাল উদ্যানের একটি ছোট অংশ। এক দিনে এই উদ্যানের বৈচিত্র্য দেখে শেষ করতে পারবে না। এই জন্যই আমাদের এখানে সদস্য হওয়ার নিয়ম আছে। সদস্যরা সারা বছর এখানে আসতে পারে।’
সুসানার কিছুক্ষণের সঙ্গ, প্রজাপতির ডানা, ফুলসহ এখানকার বৃক্ষরাজির চেয়েও সুন্দর। নিজেকে হালকা হাওয়ায় ভেসে চলা প্রজাপতির মতো লাগছে। তার কথার রেশ আর অদ্ভুত একটা মায়াবি আমেজের ভেতর ঘুরে বেড়ালাম ড্যানিয়েল স্টো বোটানিক্যাল গার্ডেনে। যেন একটা নিবিড় বনের ভেতর হারিয়ে গেছি। বন কিন্তু খুব পরিকল্পিত। এখানে সব উদ্ভিত প্রাকৃতিক বনের মতো আপনাআপনি গড়ে ওঠা নয়। বিজ্ঞানীদের পরিকল্পনামতো দীর্ঘদিনের পরিচর্যায় গড়ে উঠেছে এই অরণ্য। বাটারফ্লাই বাংলোর মতো এখানে অনেক অংশ আছে। কোথাও গ্রিনহাউস, কোথাও বিস্তৃত মাঠের প্রেইরি জোন। ছায়া সুনিবিড় বিচিত্র সব ফুলে ফুলে সাজানো উদ্যান মনটাকে কেমন প্রফুল্ল করে দেয়। এমন পরিবেশে ঘণ্টা তিনেক ছিলাম। মাঝেমধ্যে বিশ্রাম নিয়েছি কোনো গাছের ছায়ায় চেয়ারে বসে। অথবা ফুলের সৌরভের কাছে। জলের ফোয়ারা কিংবা লেকের ধারেও বসেছি। সবকিছু মিলে এতটা অভিভূত হয়েছি যে শুধু দেখেছি আর দেখেছি। কোন গাছের কী নাম, কোন ফুলের কী বৈশিষ্ট্য, এসবে চোখ বুলিয়েছি। কিন্তু পরক্ষণেই নতুন একটা কিছুর সামনে এসে একটু আগে দেখা গাছ বা ফুলের নামটা ভুলে গেছি। সবচেয়ে ভালো লেগেছে জলের ফোয়ারা আর গাছের ফাঁকে ফাঁকে আধুনিক ভাস্কর্যগুলো।
‘অসম্ভব’ বলে সে প্রায় চিৎকার করে উঠে বলল, ‘না না, তা কী করে সম্ভব! সারা পৃথিবীতে যে ২০ হাজার প্রজাতির প্রজাপতি আছে, তার বেশির ভাগ যুক্তরাষ্ট্রের নানা অঙ্গরাজ্যে রং ছড়ায়।’
উদ্ভিদ উদ্যান থেকে ফিরে যাওয়ার সময় প্রজাপতির বাংলোয় গেলাম। সুসানা নেই। অন্য দুটি মুখ। কাউকে কিছু জিজ্ঞেস না করে বাইরে বেরিয়ে গেলাম। বাইরের প্রাঙ্গণ ভেতরের চেয়ে কম নয়। গাড়ি রাখার জায়গাও অনেক। আমাদের গাড়ি রাখার জায়গায় যেতে কমপক্ষে ৭ মিনিট হাঁটতে হলো। গাড়ির ভেতর এক পা দিয়েছি। এমন সময় চোখে পড়ল সুসানা একটি গাড়িতে। ‘হাই’ বলে সম্বোধন করলাম। সে-ও হাত নেড়ে জবাব দিল। গলার স্বর উঁচু করে বললাম, ‘বাড়ি যাচ্ছ?’ সে জবাব না দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে হাসতে হাসতে আমাদের দিকে এগিয়ে এল। একটু ভড়কে কাছে এসে প্রশ্ন করল, ‘তুমি কি প্রজাপতি বাংলোয় আবার গিয়েছিলে?’
আমি বললাম, ‘হ্যাঁ।’
আমিও অপেক্ষা করছিলাম। তোমাকে বিদায় দেওয়ার সময় মনে হলো আবার দেখা হবে।
সুসানার কথা শুনে বোকার মতো হাসছিলাম। কোনো কথা পাচ্ছিলাম না, কী বলব। হঠাৎ মাথায় বুদ্ধি এল। বললাম, ‘তোমার প্রতিবেশী বাঙালিটাকে আমাদের শুভেচ্ছা জানাবে?’
সুসানা বলল, ‘নাইস। নিশ্চয় বলব। তোমার নাম কী বলব?’
‘বলবে আমার নাম ওমর ফারুক।’
‘ও আচ্ছা। তুমি কি তার সঙ্গে দেখা করতে চাও?’ সুসানা খুব কৌতূহল নিয়ে আমার দিকে তাকাল।
আমি বললাম, ‘নিশ্চয়।’
‘তাহলে তুমি এই উইকেন্ডে ফ্রিডম পার্কে সন্ধ্যা ছয়টায় আসো।’
২.
প্রজাপতির বাংলোয় যাওয়ার দুই দিন পর রোববার। বেলমন্ট থেকে গাড়িতে ফ্রিডম পার্কে গেলাম। পার্কটি হ্রদের ধারে আড়ম্বরপূর্ণ প্রকৃতির ভেতর। পরিকল্পিত গোছানো। আমাদের আসার কথা ছয়টায়। শার্লটের গ্রীষ্মের প্রলম্বিত বিকেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে এখানে মানুষ আসে। প্রেমিক-প্রেমিকা আসে নিভৃতে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতে। লেকের ওপর একটা ঘরের মতো ব্রিজ আছে। ওটা প্রেমিকদের প্রিয় জায়গা। পার্কে ঢুকতেই চোখে পড়ল স্বচ্ছ জলের সুবিশাল হ্রদ। হ্রদের মাঝখানে ফোয়ারা। এ রকম একটা জলাশয় চোখে আরাম দেয়। লেকের ধারে একজোড়া নবদম্পতির ফটোগ্রাফি চলছে। তারা বিয়ের সাজে নানাভাবে পোজ দিচ্ছেন কয়েকজন ক্যামেরাম্যানের সামনে। চারপাশের গাছপালা আর ফুল দিয়ে সাজানো। মনে হচ্ছে এখানে ফটো তুলতে আসা নবদম্পতির জন্য পার্কটি কেউ কৃত্রিম ফুল দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ফুলগুলো মোটেও কৃত্রিম নয়। আমেরিকার পাবলিক প্লেসগুলোয় এলে বোঝা যায়, এই দেশ কত বিচিত্র জাতির মিলনক্ষেত্র। পার্কের কোথাও দেখলাম চুম্বনরত তরুণ-তরুণীর ঘনিষ্ঠতা। দুজন তুর্কি সুন্দরী তরুণী মিউজিক বাজিয়ে তালে তালে নাচছে। কেউ কেউ সাইকেল চালাচ্ছে। কেউ কেউ স্কেটিং করছে। কারও পোশাক খুব সংক্ষিপ্ত। কেউ আবার ঘোমটাঢাকা। একটা মুসলিম পরিবারকে দেখলাম গোল করে বসে পিকনিক করছে। কত রকমের, কত বর্ণের মানুষ। কিন্তু আমার চোখজোড়া খুঁজছে অন্য কিছু। এখানে আমাদের আসতে বলেছিল সুসানা। এত বড় একটা পার্কে এত মানুষ, কিন্তু হইচই নেই। অনন্যা বলল, ‘বাবা লেকের অই পাশে একটা উন্মুক্ত মঞ্চ আছে। ওখানে মিউজিকসহ নানা অনুষ্ঠান হয়। এখনো মনে হয় হচ্ছে। চলো ওই দিকে যাই।’
আমরা হাঁটতে হাঁটতে লেকের অন্য পাড়ে গেলাম। সুবিশাল সাদা মঞ্চ। মনে হলো লেক থেকে উঠে আসা একটি অতিকায় রাজহাঁস। চারপাশে ঘাস বিছানো প্রাকৃতিক গ্যালারি। মঞ্চে কেউ একজন গিটার বাজিয়ে গান করছে। মাইক নেই। কিন্তু তার জোরালো কণ্ঠ হাওয়ায় ভাসছে। যতই কাছে যাচ্ছি কণ্ঠ স্পষ্ট হচ্ছে। মঞ্চের কাছে এলাম। ২৪ কি ২৫ বছরের এক তরুণ গাইছে। গানের কথাগুলো বুঝতে পারছি না। কিন্তু সুর শুনে মনে হলো যেন দূর কোনো মরুভূমিতে পথহারা কোনো পথিকের গান। সেই সুর থেকে একটা শব্দ আবিষ্কার করলাম—ফিলিস্তিন। ফিলিস্তিন। অবাক হয়ে শুধু তাকিয়ে রইলাম। গান শুনছি, আর তার কথার মর্ম বোঝার চেষ্টা করছি মগ্ন হয়ে। এমন সময় আমার কানের কাছে কেউ এসে বলল, ‘হ্যালো।’
দেখলাম, সুসানা।
ফিসফিস শব্দ করে জানতে চাইল, আসতে কোনো অসুবিধা হলো কি না। আর সে দুঃখ প্রকাশ করল পার্কের ঠিক কোন জায়গায় তার সঙ্গে দেখা হবে, সেটা আগে থেকে বলে দেয়নি বলে।
আমি তাকে ধন্যবাদ দিয়ে বললাম, এমন সুরেলা মুহূর্তে তোমার সঙ্গে দেখা হলো। এটা সত্যিই স্বপ্নের মতো। সে মৃদু হেসে বলল, ‘আসলে আজকের প্রোগ্রামটা আমাদের আগে থেকে ঠিক করা ছিল। আমরা গাজার আহত শিশুদের জন্য তহবিল সংগ্রহ করছি। ওখানে একটা ফিল্ড হাসপাতাল হবে। আমরা আমাদের দেশটাকে বাগানের মতো সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছি। আমাদের শিশু আর পোষা প্রাণীগুলোকে ফুলের মতো রাখি। কিন্তু গাজার শিশুরা খেতে পায় না, চিকিৎসা পায় না।’
সুসানার কথা শুনে আমি স্তম্ভিত। জানতে চাইলাম তার বাঙালি প্রতিবেশীর কথা। সে আমাকে উন্মুক্ত মঞ্চের দিকে আঙুল তুলল। বলল, ‘ওই যে গান গাইছে, ওর নাম রায়হান রবিন। সে তোমাদের বাংলাদেশের মানুষ। সে আমাদের ভোকাল।’
আমি কোনো কথা বললাম না। সুসানার পিছু পিছু হাঁটতে লাগলাম। সে মানুষকে বুঝিয়ে বুঝিয়ে কী সব বলছে, তাদের কাছ থেকে ১-২ ডলার তুলে তুলে একটা বাক্সে রাখছে।
এখানে সূর্য ডোবে রাত ৯টার দিকে। বিলম্বিত সন্ধ্যার দিকে সুসানাকে ছেড়ে চলে আসার সময় সে বলল, ‘বাটারফ্লাই বাংলোতে আবার এসো। প্রজাপতিরা বড়জোর বাঁচে ২ সপ্তাহ থেকে ৩ মাস। এই অল্প আয়ুর দিনগুলো তাদের কাটে সৌন্দর্য ছড়ানো আর ফুল ফোটানোর কাজে। এমন প্রজাপতির জীবন মানুষের হয় না কেন? মানুষ কেন তাদের আয়ুটা যুদ্ধে কাটাতে চায়?’