০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বোলাররাই অধিনায়কত্বের জন্য ভালো

রিপোর্টার
  • সময় : ১০:০৪:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৫ বার দেখেছে

ভারতীয় পেসার যশপ্রীত বুমরাএক্স/বুমরা

রোহিত শর্মা ভারতের টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর নতুন দায়িত্বের জন্য আলোচনায় ছিলেন বেশ কয়েকজন। এর মধ্যে ছিল যশপ্রীত বুমরার নামও। কিন্তু ভারতের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই শেষ পর্যন্ত সূর্যকুমার যাদবকে বেছে নিয়েছে। শুধু ভারতের ক্রিকেটে নয়, বেশির ভাগ দেশই বছরের পর বছর ধরে অধিনায়ক হিসেবে ব্যাটসম্যানদেরই দায়িত্ব দেয়।

বুমরা মনে করেন, নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সাহসের দরকার হয়। আর এই সাহসটা বোলারদের মধ্যেই বেশি। ভারতীয় এই পেসারের মতে, ব্যাটসম্যানদের তারকামূল্য বেশি হলেও একটা খেলায় নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থাকেন বোলাররাই।

জুনে ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার পর আপাতত বিশ্রামে আছেন বুমরা। সম্প্রতি আহমেদাবাদে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে ক্রিকেট ক্যারিয়ার ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। বোলারদের কেন অধিনায়কত্বের জন্য বিবেচনা করা হয় না—এমন প্রশ্নে বুমরা বলেন, ‘আমি তো দলকে বলতে পারি না যে আমাকে অধিনায়ক বানাও। আমার সেই ক্ষমতা নেই, আমি অত বড় পর্যায়ের লোকও নই। কিন্তু আমার মনে হয়, বোলাররা চৌকস হয়ে থাকেন। কারণ, তাঁদের ব্যাটসম্যান আউট করতে হয়। বোলারদের কঠিন কাজটিই করতে হয়। তাঁরা ব্যাটের পেছনে থাকেন না, ন্যাড়া উইকেটেও লুকানো যায় না। আমরা (বোলাররা) গুলির সামনেই থাকি। দেখা যায়, ম্যাচ হারলে বোলারদেরই দোষারোপ করা হয়। সুতরাং এই কাজটা কঠিনই।’

একজন বোলার কেন অধিনায়কত্বে ভালো করবেন, সেই যুক্তি তুলে ধরে কিছু উদাহরণও টেনেছেন সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের শীর্ষ পেসার হিসেবে বিবেচিত এই ভারতীয়, ‘বোলারদের সফল হওয়ার জন্য বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে হয়, সাহসী হতে হয়। আর নেতৃত্বের জন্য সাহসটাই দরকার। আমরা তো দেখলামই (অস্ট্রেলিয়ার) প্যাট কামিন্স খুবই ভালো করেছে। আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন পাকিস্তান দলে ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনিসকে অধিনায়কত্ব করতে দেখেছি। কপিল দেব ভারতকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন। পাকিস্তান ইমরান খানের নেতৃত্বে জিতেছে। সুতরাং, এটা বলতে হবে যে বোলাররা চৌকস হন।’

অধিনায়কত্বের বাইরে ব্যাটসম্যান-বোলারের আরেকটি বড় পার্থক্য তারকামূল্যে। দেখা যায়, দর্শক পছন্দের তালিকায় ব্যাটসম্যানরাই বেশি থাকেন। প্রচার-প্রসারও হয় তাদেরই। আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের যুগে বোলাররা হয়ে গেছেন আরও গৌণ।

ক্রিকেট ব্যাটসম্যানদের খেলা হয়ে গেছে কি না প্রশ্নেও অবশ্য দ্বিমতই জানালেন বুমরা, ‘আমি বোলারের পক্ষই নেব। এটা বুঝি যে আমাদের দেশে বড় ব্যাটসম্যানকেই মানুষ বেশি পছন্দ করে। এটা ঠিকও আছে। কিন্তু আমার মতে, বোলাররাই ম্যাচের নিয়ন্ত্রক। আমি সেই প্রজন্ম থেকে এসেছি, যখন টেস্ট ক্রিকেট টেলিভিশনে বেশি দেখানো হতো। এই এখন পর্যন্তও আমার চোখে ক্রিকেটের সেরা সংস্করণ টেস্টই।’

একটি দলের ভেতরে ব্যাটসম্যান-বোলারে কোনো বৈষম্য থাকে না বলেও জানান বুমরা, ‘আমাদের দলে ব্যাটসম্যান-বোলারে কোনো পার্থক্য নেই। কারণ, সবাই একটা লক্ষ্যেই খেলে, সেটা হচ্ছে দলের জয়। আমাদের বৃত্তের বাইরে দেখি, মানুষ ব্যাটসম্যানকেই নায়ক বানাচ্ছে। এখন কেউ তো আর মানুষকে বাধ্য করতে পারে না যে তুমি বোলারদের পছন্দ করো। ওরা বোলারদের পছন্দ করলে করবে, না করলে নাই। আমি কখনোই এটা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করি নাই যে বোলাররাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিংবা আমাদের বেশি সামনে আনো, বেশি প্রচার করো।’

ট্যাগ :

শেয়ার করুন

বোলাররাই অধিনায়কত্বের জন্য ভালো

সময় : ১০:০৪:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪

ভারতীয় পেসার যশপ্রীত বুমরাএক্স/বুমরা

রোহিত শর্মা ভারতের টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর নতুন দায়িত্বের জন্য আলোচনায় ছিলেন বেশ কয়েকজন। এর মধ্যে ছিল যশপ্রীত বুমরার নামও। কিন্তু ভারতের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই শেষ পর্যন্ত সূর্যকুমার যাদবকে বেছে নিয়েছে। শুধু ভারতের ক্রিকেটে নয়, বেশির ভাগ দেশই বছরের পর বছর ধরে অধিনায়ক হিসেবে ব্যাটসম্যানদেরই দায়িত্ব দেয়।

বুমরা মনে করেন, নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সাহসের দরকার হয়। আর এই সাহসটা বোলারদের মধ্যেই বেশি। ভারতীয় এই পেসারের মতে, ব্যাটসম্যানদের তারকামূল্য বেশি হলেও একটা খেলায় নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থাকেন বোলাররাই।

জুনে ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার পর আপাতত বিশ্রামে আছেন বুমরা। সম্প্রতি আহমেদাবাদে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে ক্রিকেট ক্যারিয়ার ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। বোলারদের কেন অধিনায়কত্বের জন্য বিবেচনা করা হয় না—এমন প্রশ্নে বুমরা বলেন, ‘আমি তো দলকে বলতে পারি না যে আমাকে অধিনায়ক বানাও। আমার সেই ক্ষমতা নেই, আমি অত বড় পর্যায়ের লোকও নই। কিন্তু আমার মনে হয়, বোলাররা চৌকস হয়ে থাকেন। কারণ, তাঁদের ব্যাটসম্যান আউট করতে হয়। বোলারদের কঠিন কাজটিই করতে হয়। তাঁরা ব্যাটের পেছনে থাকেন না, ন্যাড়া উইকেটেও লুকানো যায় না। আমরা (বোলাররা) গুলির সামনেই থাকি। দেখা যায়, ম্যাচ হারলে বোলারদেরই দোষারোপ করা হয়। সুতরাং এই কাজটা কঠিনই।’

একজন বোলার কেন অধিনায়কত্বে ভালো করবেন, সেই যুক্তি তুলে ধরে কিছু উদাহরণও টেনেছেন সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের শীর্ষ পেসার হিসেবে বিবেচিত এই ভারতীয়, ‘বোলারদের সফল হওয়ার জন্য বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে হয়, সাহসী হতে হয়। আর নেতৃত্বের জন্য সাহসটাই দরকার। আমরা তো দেখলামই (অস্ট্রেলিয়ার) প্যাট কামিন্স খুবই ভালো করেছে। আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন পাকিস্তান দলে ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনিসকে অধিনায়কত্ব করতে দেখেছি। কপিল দেব ভারতকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন। পাকিস্তান ইমরান খানের নেতৃত্বে জিতেছে। সুতরাং, এটা বলতে হবে যে বোলাররা চৌকস হন।’

অধিনায়কত্বের বাইরে ব্যাটসম্যান-বোলারের আরেকটি বড় পার্থক্য তারকামূল্যে। দেখা যায়, দর্শক পছন্দের তালিকায় ব্যাটসম্যানরাই বেশি থাকেন। প্রচার-প্রসারও হয় তাদেরই। আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের যুগে বোলাররা হয়ে গেছেন আরও গৌণ।

ক্রিকেট ব্যাটসম্যানদের খেলা হয়ে গেছে কি না প্রশ্নেও অবশ্য দ্বিমতই জানালেন বুমরা, ‘আমি বোলারের পক্ষই নেব। এটা বুঝি যে আমাদের দেশে বড় ব্যাটসম্যানকেই মানুষ বেশি পছন্দ করে। এটা ঠিকও আছে। কিন্তু আমার মতে, বোলাররাই ম্যাচের নিয়ন্ত্রক। আমি সেই প্রজন্ম থেকে এসেছি, যখন টেস্ট ক্রিকেট টেলিভিশনে বেশি দেখানো হতো। এই এখন পর্যন্তও আমার চোখে ক্রিকেটের সেরা সংস্করণ টেস্টই।’

একটি দলের ভেতরে ব্যাটসম্যান-বোলারে কোনো বৈষম্য থাকে না বলেও জানান বুমরা, ‘আমাদের দলে ব্যাটসম্যান-বোলারে কোনো পার্থক্য নেই। কারণ, সবাই একটা লক্ষ্যেই খেলে, সেটা হচ্ছে দলের জয়। আমাদের বৃত্তের বাইরে দেখি, মানুষ ব্যাটসম্যানকেই নায়ক বানাচ্ছে। এখন কেউ তো আর মানুষকে বাধ্য করতে পারে না যে তুমি বোলারদের পছন্দ করো। ওরা বোলারদের পছন্দ করলে করবে, না করলে নাই। আমি কখনোই এটা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করি নাই যে বোলাররাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিংবা আমাদের বেশি সামনে আনো, বেশি প্রচার করো।’