১০:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে কর্মসংস্থানের অভাব, বিদেশ যেতে মরিয়া তরুণেরা

রিপোর্টার
  • সময় : ০৫:৫১:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪
  • / ১৫ বার দেখেছে

দেশে পছন্দমতো কাজ না পাওয়ায় তরুণ জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। তাঁরা কাজের সন্ধানে কিংবা উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালে কাজের প্রত্যাশায় গড়ে প্রতি ঘণ্টায় দেড় শ বাংলাদেশি দেশ ছাড়ছেন। প্রতিবছর বাংলাদেশিদের জন্য দেশে-বিদেশে যত নতুন কর্মসংস্থান হয়, তার এক-তৃতীয়াংশই হচ্ছে প্রবাসে। স্বল্প শিক্ষিত তরুণদের প্রধান গন্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো।

আবার শোভন কাজ না পেয়ে ও উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় অনেক বাংলাদেশি তরুণ ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অভিবাসী হতে চেষ্টা করছেন। তাঁদের কেউ কেউ সফল হন, আবার অনেকে ব্যর্থ হয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করছেন বা বিভিন্ন দেশের কারাগারে বন্দী জীবন যাপন করছেন। ঝুঁকি নিয়েও এই তরুণ গোষ্ঠী যেন দেশ ছাড়তে মরিয়া।

প্রবাসে জনসংখ্যা বেশি, এমন দেশের তালিকায় বাংলাদেশ এখন ষষ্ঠ। আর প্রবাসী আয় গ্রহণের দিক থেকে অবস্থান সপ্তম। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি কাজ খুঁজে পেয়েছেন কিংবা প্রতিবছর কাজ খুঁজতে যান।

সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিবছর শ্রমবাজারে ২০ থেকে ২২ লাখ তরুণ–তরুণী নতুন করে যুক্ত হচ্ছেন। দেশের অভ্যন্তরে কর্মসংস্থান হয় ১২ থেকে ১৩ লাখের। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষের কর্মসংস্থান হয় মজুরিভিত্তিক অনানুষ্ঠানিক খাতে, বাকিরা শোভন চাকরিতে যান। সেই হিসাবে প্রতিবছর তিন লাখের মতো শোভন চাকরি হয়। আর প্রতিবছর ৮ থেকে ৯ লাখ মানুষ প্রবাসে যান। তবে ২০২২ ও ২০২৩ সালে প্রতিবছর ১০ লাখের বেশি নারী-পুরুষ কাজের জন্য প্রবাসে গেছেন।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, চাকরির সিংহভাগই তৈরি হয় বেসরকারি খাতে। কিন্তু শোভন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বড় ধরনের ব্যর্থতা আছে। তাই শিক্ষিত ও অল্প শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে একধরনের হতাশা কাজ করছে। এই হতাশ যুবগোষ্ঠীর অনেকে নিরুপায় হয়ে অসম্ভব কঠিন পথে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন। অনেকে জমিজমা বিক্রি এবং ধারদেনা করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যান, মানবেতর জীবনযাপন করেন। পরিশ্রমের তুলনায় ন্যায্য মজুরি না পাওয়ার অভিযোগও আছে।

ট্যাগ :

শেয়ার করুন

দেশে কর্মসংস্থানের অভাব, বিদেশ যেতে মরিয়া তরুণেরা

সময় : ০৫:৫১:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪

দেশে পছন্দমতো কাজ না পাওয়ায় তরুণ জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। তাঁরা কাজের সন্ধানে কিংবা উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালে কাজের প্রত্যাশায় গড়ে প্রতি ঘণ্টায় দেড় শ বাংলাদেশি দেশ ছাড়ছেন। প্রতিবছর বাংলাদেশিদের জন্য দেশে-বিদেশে যত নতুন কর্মসংস্থান হয়, তার এক-তৃতীয়াংশই হচ্ছে প্রবাসে। স্বল্প শিক্ষিত তরুণদের প্রধান গন্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো।

আবার শোভন কাজ না পেয়ে ও উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় অনেক বাংলাদেশি তরুণ ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অভিবাসী হতে চেষ্টা করছেন। তাঁদের কেউ কেউ সফল হন, আবার অনেকে ব্যর্থ হয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করছেন বা বিভিন্ন দেশের কারাগারে বন্দী জীবন যাপন করছেন। ঝুঁকি নিয়েও এই তরুণ গোষ্ঠী যেন দেশ ছাড়তে মরিয়া।

প্রবাসে জনসংখ্যা বেশি, এমন দেশের তালিকায় বাংলাদেশ এখন ষষ্ঠ। আর প্রবাসী আয় গ্রহণের দিক থেকে অবস্থান সপ্তম। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি কাজ খুঁজে পেয়েছেন কিংবা প্রতিবছর কাজ খুঁজতে যান।

সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিবছর শ্রমবাজারে ২০ থেকে ২২ লাখ তরুণ–তরুণী নতুন করে যুক্ত হচ্ছেন। দেশের অভ্যন্তরে কর্মসংস্থান হয় ১২ থেকে ১৩ লাখের। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষের কর্মসংস্থান হয় মজুরিভিত্তিক অনানুষ্ঠানিক খাতে, বাকিরা শোভন চাকরিতে যান। সেই হিসাবে প্রতিবছর তিন লাখের মতো শোভন চাকরি হয়। আর প্রতিবছর ৮ থেকে ৯ লাখ মানুষ প্রবাসে যান। তবে ২০২২ ও ২০২৩ সালে প্রতিবছর ১০ লাখের বেশি নারী-পুরুষ কাজের জন্য প্রবাসে গেছেন।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, চাকরির সিংহভাগই তৈরি হয় বেসরকারি খাতে। কিন্তু শোভন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বড় ধরনের ব্যর্থতা আছে। তাই শিক্ষিত ও অল্প শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে একধরনের হতাশা কাজ করছে। এই হতাশ যুবগোষ্ঠীর অনেকে নিরুপায় হয়ে অসম্ভব কঠিন পথে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন। অনেকে জমিজমা বিক্রি এবং ধারদেনা করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যান, মানবেতর জীবনযাপন করেন। পরিশ্রমের তুলনায় ন্যায্য মজুরি না পাওয়ার অভিযোগও আছে।