১২:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মৃত্যুদণ্ডের আসামি চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ চায় সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম

রিপোর্টার
  • সময় : ০৫:৩৪:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪
  • / ১৩ বার দেখেছে

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের আদালতের আদেশের বিষয়ে আইনি ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামÑমুক্তিযুদ্ধ ’৭১।

আজ শনিবার সংগঠনের এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়। বিবৃতিতে চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ছাড়াও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আরেক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আশরাফুজ্জামান খানকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

ইসলামী ছাত্রসংঘের তৎকালীন এই দুই নেতা বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর দেশ ত্যাগ করেন। আশরাফুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। আর চৌধুরী মুঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব লাভ করেন।

সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে উল্লেখ করে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে তাঁর ফৌজদারি অপরাধের বর্ণনা যুক্ত করা হয়। তখনকার ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল প্রতিবেদনটি টুইটারে (বর্তমানে এক্স) শেয়ার করেন। এতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ৬০ হাজার পাউন্ড ক্ষতিপূরণ চেয়ে মানহানি মামলা করেন চৌধুরী মুঈনুদ্দীন। মামলাটি ব্রিটিশ হাইকোর্টে খারিজ হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়। ২০ জুন আদালত অভিযোগটি আমলে নেয় এবং মুঈনুদ্দিনকে মামলা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়।

সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মনে করে, যুক্তরাজ্য বা অন্য কোনো দেশের আদালতের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য নয়। তা সত্ত্বেও ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টের আদেশটি ব্যবহার করে মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও দেশের বিচারব্যবস্থাকে বহির্বিশ্বে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করা হতে পারে। কারণ, মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যাকারী, যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ইতিমধ্যে যে রায়গুলো দিয়েছে তা প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা অব্যাহত আছে। সে কারণে ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টের এমন সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারকে চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের বিষয়ে যথাযথ আইনি ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এই আদেশকে হালকাভাবে দেখা বা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়জন শিক্ষক, ছয়জন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও তিনজন চিকিৎসকসহ ১৮ জন বুদ্ধিজীবীকে অপহরণ ও হত্যার দায় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। রায়ের পরে ইন্টারপোলে তাদের নামে রেড নোটিশ জারি করা হয়। কিন্তু আজও পর্যন্ত তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।

এদিকে যুক্তরাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মানহানি মামলায় যুক্তরাজ্যের সর্বোচ্চ আদালত চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের পক্ষে বিতর্কিত রায় দিয়েছে বলে মনে করে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (আইসিএসএফ)। একে হতাশাজনক বলেও মন্তব্য করেছে আইসিএসএফ।

ট্যাগ :

শেয়ার করুন

মৃত্যুদণ্ডের আসামি চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ চায় সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম

সময় : ০৫:৩৪:১৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের আদালতের আদেশের বিষয়ে আইনি ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামÑমুক্তিযুদ্ধ ’৭১।

আজ শনিবার সংগঠনের এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়। বিবৃতিতে চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ছাড়াও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আরেক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আশরাফুজ্জামান খানকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

ইসলামী ছাত্রসংঘের তৎকালীন এই দুই নেতা বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর দেশ ত্যাগ করেন। আশরাফুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। আর চৌধুরী মুঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব লাভ করেন।

সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে উল্লেখ করে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে তাঁর ফৌজদারি অপরাধের বর্ণনা যুক্ত করা হয়। তখনকার ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল প্রতিবেদনটি টুইটারে (বর্তমানে এক্স) শেয়ার করেন। এতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ৬০ হাজার পাউন্ড ক্ষতিপূরণ চেয়ে মানহানি মামলা করেন চৌধুরী মুঈনুদ্দীন। মামলাটি ব্রিটিশ হাইকোর্টে খারিজ হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়। ২০ জুন আদালত অভিযোগটি আমলে নেয় এবং মুঈনুদ্দিনকে মামলা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়।

সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মনে করে, যুক্তরাজ্য বা অন্য কোনো দেশের আদালতের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য নয়। তা সত্ত্বেও ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টের আদেশটি ব্যবহার করে মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও দেশের বিচারব্যবস্থাকে বহির্বিশ্বে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করা হতে পারে। কারণ, মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যাকারী, যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ইতিমধ্যে যে রায়গুলো দিয়েছে তা প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা অব্যাহত আছে। সে কারণে ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টের এমন সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারকে চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের বিষয়ে যথাযথ আইনি ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এই আদেশকে হালকাভাবে দেখা বা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়জন শিক্ষক, ছয়জন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও তিনজন চিকিৎসকসহ ১৮ জন বুদ্ধিজীবীকে অপহরণ ও হত্যার দায় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। রায়ের পরে ইন্টারপোলে তাদের নামে রেড নোটিশ জারি করা হয়। কিন্তু আজও পর্যন্ত তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।

এদিকে যুক্তরাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মানহানি মামলায় যুক্তরাজ্যের সর্বোচ্চ আদালত চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের পক্ষে বিতর্কিত রায় দিয়েছে বলে মনে করে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (আইসিএসএফ)। একে হতাশাজনক বলেও মন্তব্য করেছে আইসিএসএফ।