০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম: অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে কঠিন পথ

রিপোর্টার
  • সময় : ০৮:৪৫:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৯ বার দেখেছে

বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব এখন ড. ইউনূসের কাঁধে। এরপর তাঁকে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।

ছাত্র–জনতার বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরে দাঁড়ানোর পর যাত্রা শুরু করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ‘স্বপ্নের বাংলাদেশ’ পুনর্গঠন করতে চায় এই সরকার। তবে তাদের সামনের পথ অনেক কঠিন। আর কবে নাগাদ নির্বাচনের আয়োজন করা হবে, তা–ও স্পষ্ট নয়।

ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এসব কথা। এএফপি ছাড়াও বিগত কয়েক দিনে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করে আসছে বিবিসি, আল–জাজিরা, সিএনএন, নিউইয়র্ক টাইমস, রয়টার্স, এনডিটিভিসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের খবরও গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করেছে তারা।

আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশে বছরের পর বছর ধরে চলা স্বৈরশাসনের পর ‘দরিদ্রের ব্যাংকার’ হিসেবে পরিচিত ড. ইউনূস গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারবেন।

 ‘বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নিলেন ইউনূস’—শিরোনামে বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, ড. ইউনূসের মন্ত্রিসভায় সরকারবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া দুই শিক্ষার্থী রয়েছেন। আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশে বছরের পর বছর ধরে চলা স্বৈরশাসনের পর ‘দরিদ্রের ব্যাংকার’ হিসেবে পরিচিত ড. ইউনূস গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারবেন।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর শিরোনাম মোটাদাগে একই ছিল। বিবিসির মতো প্রায় একই শিরোনামে প্রকাশিত কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে এবং নির্বাচনের আয়োজন করতে কাজ করবে। ইতিমধ্যে এই সরকারের প্রতি শুভকামনা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও ড. ইউনূসের সরকারকে স্বাগত জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র এগিয়ে নিতে একসঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত তারা।

সেনাবাহিনী ক্ষমতা নিতে পারে—এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছিল। তবে ড. ইউনূসকে আহ্বান জানানো হলে দ্রুতই নেতৃত্বে শূন্যতা পূরণে রাজি হন তিনি।

‘কলহবিধ্বস্ত একটি দেশকে সারিয়ে তুলতে দায়িত্ব নিলেন ড. ইউনূস’ শিরোনামে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক আন্দোলনকে ঘিরে বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব এখন ড. ইউনূসের কাঁধে। এরপর তাঁকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন ড. ইউনূসের জীবনের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেছে। সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক উদ্যোক্তা ড. ইউনূস বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানের কারণে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। দীর্ঘদিন ধরে তিনি সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বড় সমালোচক ছিলেন। শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর বাংলাদেশের নেতৃত্বে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। সেনাবাহিনী ক্ষমতা নিতে পারে—এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছিল। তবে ড. ইউনূসকে আহ্বান জানানো হলে দ্রুতই নেতৃত্বে শূন্যতা পূরণে রাজি হন তিনি।

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের খবর প্রকাশ করেছে দ্য ডন ও জিও নিউজের মতো পাকিস্তানি গণমাধ্যমগুলোও। বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলোও বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক আন্দোলন ঘিরে নিহত ব্যক্তিদের সম্মান জানানোর মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দিন শুরু করেছেন ড. ইউনূস। বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণের সময় ৮৪ বছর বয়সী এই অর্থনীতিবিদ সংবিধান সমুন্নত রাখার শপথ নিয়েছেন। তাঁর সরকারের সামনে এখন কঠিন পথ।

ট্যাগ :

শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম: অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে কঠিন পথ

সময় : ০৮:৪৫:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪

বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব এখন ড. ইউনূসের কাঁধে। এরপর তাঁকে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।

ছাত্র–জনতার বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরে দাঁড়ানোর পর যাত্রা শুরু করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ‘স্বপ্নের বাংলাদেশ’ পুনর্গঠন করতে চায় এই সরকার। তবে তাদের সামনের পথ অনেক কঠিন। আর কবে নাগাদ নির্বাচনের আয়োজন করা হবে, তা–ও স্পষ্ট নয়।

ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এসব কথা। এএফপি ছাড়াও বিগত কয়েক দিনে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করে আসছে বিবিসি, আল–জাজিরা, সিএনএন, নিউইয়র্ক টাইমস, রয়টার্স, এনডিটিভিসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের খবরও গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করেছে তারা।

আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশে বছরের পর বছর ধরে চলা স্বৈরশাসনের পর ‘দরিদ্রের ব্যাংকার’ হিসেবে পরিচিত ড. ইউনূস গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারবেন।

 ‘বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নিলেন ইউনূস’—শিরোনামে বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, ড. ইউনূসের মন্ত্রিসভায় সরকারবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া দুই শিক্ষার্থী রয়েছেন। আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশে বছরের পর বছর ধরে চলা স্বৈরশাসনের পর ‘দরিদ্রের ব্যাংকার’ হিসেবে পরিচিত ড. ইউনূস গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারবেন।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর শিরোনাম মোটাদাগে একই ছিল। বিবিসির মতো প্রায় একই শিরোনামে প্রকাশিত কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে এবং নির্বাচনের আয়োজন করতে কাজ করবে। ইতিমধ্যে এই সরকারের প্রতি শুভকামনা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও ড. ইউনূসের সরকারকে স্বাগত জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র এগিয়ে নিতে একসঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত তারা।

সেনাবাহিনী ক্ষমতা নিতে পারে—এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছিল। তবে ড. ইউনূসকে আহ্বান জানানো হলে দ্রুতই নেতৃত্বে শূন্যতা পূরণে রাজি হন তিনি।

‘কলহবিধ্বস্ত একটি দেশকে সারিয়ে তুলতে দায়িত্ব নিলেন ড. ইউনূস’ শিরোনামে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক আন্দোলনকে ঘিরে বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব এখন ড. ইউনূসের কাঁধে। এরপর তাঁকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন ড. ইউনূসের জীবনের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেছে। সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক উদ্যোক্তা ড. ইউনূস বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানের কারণে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। দীর্ঘদিন ধরে তিনি সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বড় সমালোচক ছিলেন। শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর বাংলাদেশের নেতৃত্বে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। সেনাবাহিনী ক্ষমতা নিতে পারে—এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছিল। তবে ড. ইউনূসকে আহ্বান জানানো হলে দ্রুতই নেতৃত্বে শূন্যতা পূরণে রাজি হন তিনি।

বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের খবর প্রকাশ করেছে দ্য ডন ও জিও নিউজের মতো পাকিস্তানি গণমাধ্যমগুলোও। বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলোও বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক আন্দোলন ঘিরে নিহত ব্যক্তিদের সম্মান জানানোর মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দিন শুরু করেছেন ড. ইউনূস। বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণের সময় ৮৪ বছর বয়সী এই অর্থনীতিবিদ সংবিধান সমুন্নত রাখার শপথ নিয়েছেন। তাঁর সরকারের সামনে এখন কঠিন পথ।