মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের মেয়াদ আর দুই মাসের মতো বাকি আছে। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে এরই মধ্যে বিস্ফোরক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
গতকাল রোববার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালানোর অনুমতি দিয়েছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাইডেনের এমন সিদ্ধান্ত প্রকাশিত হওয়ার পর ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত নিয়ে ওয়াশিংটনের নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এলো।
সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলেছে, বাইডেনের এমন সিদ্ধান্তের পর রুশ ভূখণ্ডের গভীরে ইউক্রেন প্রথম হামলা সম্ভবত এটিএসিএমএস রকেট দিয়ে চালাবে। এসব রকেট ১৯০ মাইল (৩০৬ কিলোমিটার) দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
বাইডেনের এমন সিদ্ধান্তের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়া। সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাশিয়ান সরকারের সংবাদমাধ্যম রসিয়স্কায়া গাজেটায় ঘোষণা দিয়েছে, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন… তার প্রশাসনের সবচেয়ে বেশি উত্তেজক এবং অবিবেচিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তের ঝুঁকি বিপর্যয়কর পরিণতি।
আরো পড়ুনঃ গাজীপুরে পোশাকশ্রমিক-এলাকাবাসীর পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, কারখানায় আগুন
ক্রেমলিন-পন্থী লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান রুশ এমপি লিওনিদ স্লুটস্কি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে এই সিদ্ধান্ত অনিবার্যভাবে একটি গুরুতর উত্তেজনা বৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে এবং এর পরিণতি হবে গুরুতর।
রাশিয়ান সিনেটর ভ্লাদিমির জাবারভ বাইডেনের এমন সিদ্ধান্তকে ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে একটি অভূতপূর্ব পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
এছাড়া বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যম টেলিগ্রামে রুশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ফেডারেশন কাউন্সিলের জ্যেষ্ঠ সদস্য আন্দ্রি ক্লিশাস বলেন, পশ্চিমা সংঘাত এমন মাত্রার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তা সকালের মধ্যে ইউক্রেন রাষ্ট্রকে সম্পূর্ণ ধ্বংসাবশেষে পরিণত করার মধ্য দিয়ে শেষ হতে পারে।
বাইডেনের এমন সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসার পর এখন পর্যন্ত মন্তব্য করেনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে গত সেপ্টেম্বরে পুতিন সতর্ক করেছিলেন যে এমন পদক্ষেপ মানে ন্যাটো মিত্র জোট সরাসরি ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিলো। পুতিন বলেছিলেন, নতুন হুমকির ভিত্তিতে রাশিয়া ‘উপযুক্ত সিদ্ধান্ত’ নিতে বাধ্য হতে পারে।
আগামী ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন নির্বাচনের আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, ক্ষমতায় থাকলে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ হতো না। সেই সঙ্গে ক্ষমতায় গেলে নিমিষেই এই যুদ্ধ বন্ধ করবেন।
তাই ক্রেমলিন এখন ২০ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না তার আগেই বাইডেনের এমন সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ব্যবস্থা নেবেন।