Site icon আপনার বার্তা

সহিংসতা কবলিত মণিপুর রাজ্যে বিক্ষোভের সময় ইন্টারনেট বন্ধ

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের কর্তৃপক্ষ জাতিগত সহিংসতার কারণে কিছু এলাকায় ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা রাজনীতিবিদদের বাড়ি ঘেরাও করছিল- এমন এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে।

সবশেষ নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, সহিংসতায় সবশেষ নিহতদের মধ্যে- গত শুক্রবার একটি নদীতে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়ের সদস্য বলে মনে করা তিনটি লাশ পাওয়া গেছে।

আরো পড়ুনঃঅবসর নিয়ে আরও স্পষ্ট বার্তা রোনালদোর

মেইতেই প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, কুকি নৃগোষ্ঠীর ছয় সদস্যের একটি পরিবারকে তুলে নিয়েছিল, লাশগুলো তাদেরই সদস্য।

চাকরি ও শিক্ষায় সরকারি অনুদান ও কোটা নিয়ে আন্তঃসাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে গত বছরের মে মাস থেকে মণিপুরে অন্তত ২৫০ জন নিহত ও ৬০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

রাজ্য পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, শনিবার (১৬ নভেম্বর) বিপুলসংখ্যক বিক্ষোভকারী জড়ো হয়ে রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলে আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে দেখা করতে চান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন রয়টার্সকে বলেন, যখন তাদের দাবি উপেক্ষা করা হয়, তখন তারা বাড়িঘরে (আইনপ্রণেতাদের) ঢুকে পড়ে, যানবাহনে আগুন দেয় এবং সম্পত্তি ভাঙচুর করে।

আরো পড়ুনঃশেখ হাসিনার সঙ্গে কথোপকথন, সেই যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিক্ষুব্ধ জনতা অন্তত নয়জন আইনপ্রণেতার বাড়ি ঘিরে রেখেছে। ভাঙচুর করা হয় চারটি বাড়িতে।

অন্য একটি স্থান থেকে বিজেপি আইনপ্রণেতা এল সুশিন্দ্রো মেইতেই টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন, আমার বাড়িতে এখন হামলা হচ্ছে। বাড়ির কিছু ক্ষতি হয়েছে, কাচ (জানালা) ভেঙে গেছে, কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনী ভেতরে প্রবেশের আগেই জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে সক্ষম হয়েছে।

গত সপ্তাহে (সোমবার) নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১০ সশস্ত্র কুকি বিদ্রোহী নিহত হওয়ার পর রাজ্যটিতে সহিংসতা নতুন করে শুরু হয়। পরে একই পরিবারের ছয় সদস্য নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া যায়।

গত সপ্তাহে রাজ্যের জিরিবাম জেলায় কুকি উপজাতি সম্প্রদায়ের ৩১ বছর বয়সী হামার গোষ্ঠীর এক নারীকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। এ ঘটনায় কুকি গোষ্ঠীগুলো মেইতেইদের দায়ী করেছে।

জাতিগত উত্তেজনা শুরুর পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যটিতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী পাঠিয়েছে। ৩২ লাখ মানুষের এই রাজ্যে উভয় সম্প্রদায়ের সহিংস সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

মণিপুর দুটি জাতিগত অঞ্চলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। মেইতেই দ্বারা নিয়ন্ত্রিত উপত্যকা অঞ্চল এবং কুকিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত পাহাড়। অঞ্চলগুলো ফেডারেল আধাসামরিক বাহিনীর টহল বসিয়ে ‘নো-ম্যানস ল্যান্ড’ দিয়ে পৃথক করা হয়েছে।

Exit mobile version