০৫:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাইডেনকে চারটি ‘রেড লাইন’ বেঁধে দিলেন শি

রিপোর্টার
  • সময় : ০৪:৫৩:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
  • / ১৪ বার দেখেছে

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ভারসাম্যপূর্ণ ও সুস্থ সম্পর্কের জন্য চার ধরনের ‘রেড লাইন’ বেঁধে দিয়েছেন চলমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। এই ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করা উচিত নয় বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় সনয় শনিবার (১৬ নভেম্বর) পেরুর রাজধানী লিমায় এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন ফোরামে (এপেক) বাইডেনের সঙ্গে এক বৈঠকে শি জোর দিয়ে বলেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে ‘স্থিতিশীল, সুস্থ ও টেকসই’ সম্পর্ক গড়ে তোলাই বেইজিংয়ের লক্ষ্য।

তবে প্রধান দুই দেশ হিসেবে চীন বা যুক্তরাষ্ট্র কারোরই উচিত হবে না নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী একে অপরকে ‘নতুন করে সাজানোর’ চেষ্টা করা।

তথাকথিত ‘শক্তির অবস্থান’ থেকে দমন করা অথবা অন্যকে ‘উন্নয়নের বৈধ অধিকার থেকে বঞ্চিত করাও’ উচিৎ নয়। যেমন- এককভাবে কেউ ‘নেতৃস্থানীয় মর্যাদা’ বজায় রাখার মানসিকতা রাখা।

আরো পড়ুনঃ ৫৭ শতাংশ ব্যবসায়ী মনে করেন সেবা পেতে ঘুষ দিতে হয়
শি চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টার বিরুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দেন। বলেন, নতুন স্নায়ুযুদ্ধ হওয়া উচিত নয় এবং এখানে জয় পরাজয়ের কিছু নেই। চীনকে নিয়ন্ত্রণ করা অবিবেচনাপ্রসূত, অগ্রহণযোগ্য এবং এটি ব্যর্থ হতে বাধ্য।

চীনা নেতা জোর দিয়েছেন, দুই দেশের একে অপরকে ‘সমান হিসাবে বিবেচনা করা’ গুরুত্বপূর্ণ।

শি স্বীকার করেন যে, বৃহৎ শক্তিগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য অনিবার্য হলেও কিছু মূল স্বার্থকে সম্মান করা উচিৎ।

চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, বেইজিং ও ওয়াশিংটন যদি ‘একে অপরকে অংশীদার ও বন্ধুর মতো আচরণ’ করে এবং ‘হিংস্র প্রতিযোগিতা’ এড়াতে পারে, তবে উভয়েই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করতে পারবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো ‘এক চীন’ নীতি অনুসরণ করে। ১৯৪৯ সাল থেকে স্বায়ত্তশাসন সত্ত্বেও তাইওয়ানকে চীনের অংশ হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। তবে তারা তাইওয়ানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। তারা দেশটিতে অস্ত্র বিক্রি করে এবং ‘সম্ভাব্য চীনা আক্রমণের বিরুদ্ধে’ সামরিক সহায়তারও প্রতিশ্রুতি দেয়। এ বিষয়টিকে চীন তাদের ‘সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন’ হিসাবে দেখে।

এদিকে, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চীন প্রস্তুত বলেও জানান শি।

তবে নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বার্থ, বিশেষ করে ‘চীনের বিরুদ্ধে আগ্রাসী সংরক্ষণবাদী নীতি’ অনুসরণ করার ওপর জোর দিয়েছিলেন।

প্রথম মেয়াদের সময় ট্রাম্প চীনের সঙ্গে ‘বাণিজ্য যুদ্ধে’ জড়িয়ে পড়েছিলেন। উভয় দেশই শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।

বাইডেন প্রশাসনও তার প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প যা শুরু করেছিল তা অব্যাহত রেখেছে। গত সেপ্টেম্বরের কয়েক বিলিয়ন ডলার মূল্যের চীনা আমদানির উপর শুল্ক আরোপ করে তারা।

‘চীনা গুপ্তচর বেলুন ঘটনা’র পর সান ফ্রান্সিসকোতে ২০২৩ সালের অ্যাপেক শীর্ষ সম্মেলনে বাইডেন-শি’র মধ্যে সবশেষ বৈঠক হয়েছিল। চার ঘণ্টার ওই বৈঠক শেষে বাইডেন তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যান এবং পরে এক সংবাদ সম্মেলনে শি’কে দ্বিতীয়বারের মতো ‘স্বৈরশাসক’ বলে অভিহিত করেন।

শেয়ার করুন

বাইডেনকে চারটি ‘রেড লাইন’ বেঁধে দিলেন শি

সময় : ০৪:৫৩:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ভারসাম্যপূর্ণ ও সুস্থ সম্পর্কের জন্য চার ধরনের ‘রেড লাইন’ বেঁধে দিয়েছেন চলমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। এই ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করা উচিত নয় বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় সনয় শনিবার (১৬ নভেম্বর) পেরুর রাজধানী লিমায় এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন ফোরামে (এপেক) বাইডেনের সঙ্গে এক বৈঠকে শি জোর দিয়ে বলেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে ‘স্থিতিশীল, সুস্থ ও টেকসই’ সম্পর্ক গড়ে তোলাই বেইজিংয়ের লক্ষ্য।

তবে প্রধান দুই দেশ হিসেবে চীন বা যুক্তরাষ্ট্র কারোরই উচিত হবে না নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী একে অপরকে ‘নতুন করে সাজানোর’ চেষ্টা করা।

তথাকথিত ‘শক্তির অবস্থান’ থেকে দমন করা অথবা অন্যকে ‘উন্নয়নের বৈধ অধিকার থেকে বঞ্চিত করাও’ উচিৎ নয়। যেমন- এককভাবে কেউ ‘নেতৃস্থানীয় মর্যাদা’ বজায় রাখার মানসিকতা রাখা।

আরো পড়ুনঃ ৫৭ শতাংশ ব্যবসায়ী মনে করেন সেবা পেতে ঘুষ দিতে হয়
শি চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টার বিরুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দেন। বলেন, নতুন স্নায়ুযুদ্ধ হওয়া উচিত নয় এবং এখানে জয় পরাজয়ের কিছু নেই। চীনকে নিয়ন্ত্রণ করা অবিবেচনাপ্রসূত, অগ্রহণযোগ্য এবং এটি ব্যর্থ হতে বাধ্য।

চীনা নেতা জোর দিয়েছেন, দুই দেশের একে অপরকে ‘সমান হিসাবে বিবেচনা করা’ গুরুত্বপূর্ণ।

শি স্বীকার করেন যে, বৃহৎ শক্তিগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য অনিবার্য হলেও কিছু মূল স্বার্থকে সম্মান করা উচিৎ।

চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, বেইজিং ও ওয়াশিংটন যদি ‘একে অপরকে অংশীদার ও বন্ধুর মতো আচরণ’ করে এবং ‘হিংস্র প্রতিযোগিতা’ এড়াতে পারে, তবে উভয়েই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করতে পারবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো ‘এক চীন’ নীতি অনুসরণ করে। ১৯৪৯ সাল থেকে স্বায়ত্তশাসন সত্ত্বেও তাইওয়ানকে চীনের অংশ হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। তবে তারা তাইওয়ানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। তারা দেশটিতে অস্ত্র বিক্রি করে এবং ‘সম্ভাব্য চীনা আক্রমণের বিরুদ্ধে’ সামরিক সহায়তারও প্রতিশ্রুতি দেয়। এ বিষয়টিকে চীন তাদের ‘সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন’ হিসাবে দেখে।

এদিকে, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চীন প্রস্তুত বলেও জানান শি।

তবে নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বার্থ, বিশেষ করে ‘চীনের বিরুদ্ধে আগ্রাসী সংরক্ষণবাদী নীতি’ অনুসরণ করার ওপর জোর দিয়েছিলেন।

প্রথম মেয়াদের সময় ট্রাম্প চীনের সঙ্গে ‘বাণিজ্য যুদ্ধে’ জড়িয়ে পড়েছিলেন। উভয় দেশই শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।

বাইডেন প্রশাসনও তার প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প যা শুরু করেছিল তা অব্যাহত রেখেছে। গত সেপ্টেম্বরের কয়েক বিলিয়ন ডলার মূল্যের চীনা আমদানির উপর শুল্ক আরোপ করে তারা।

‘চীনা গুপ্তচর বেলুন ঘটনা’র পর সান ফ্রান্সিসকোতে ২০২৩ সালের অ্যাপেক শীর্ষ সম্মেলনে বাইডেন-শি’র মধ্যে সবশেষ বৈঠক হয়েছিল। চার ঘণ্টার ওই বৈঠক শেষে বাইডেন তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যান এবং পরে এক সংবাদ সম্মেলনে শি’কে দ্বিতীয়বারের মতো ‘স্বৈরশাসক’ বলে অভিহিত করেন।