০৪:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘দায়মুক্তি’ ও ‘একক ক্ষমতা’ সংক্রান্ত দুটি ধারা-উপধারা অবৈধ : হাইকোর্ট

রিপোর্টার
  • সময় : ০১:৫৭:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪
  • / ১৮ বার দেখেছে

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ‘দায়মুক্তি’ নামের ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন ২০১০-এর দুটি ধারা-উপধারা অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার এই রায় দেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ।

রিটের পক্ষে আদালতে রুল শুনানি করেন আইনজীবী শাহদীন মালিক। সঙ্গে ছিলেন মো. তায়্যিব-উল-ইসলাম।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনজুর আলম। অবৈধ ঘোষণা করা ধারা দুটি হচ্ছে— জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রীর একক ক্ষমতা সংক্রান্ত ৬(২) উপধারা এবং দায়মুক্তি সংক্রান্ত ৯ ধারা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনটি পাস করা হয় ২০১০ সালের ১২ অক্টোবর। জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুতের উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়াতে দরপত্র ছাড়াই প্রকল্প নেওয়ার সুযোগ রাখা হয় আইনে।

আরো পড়ুনঃ ট্রাম্পের জয়ে ‘স্বপ্ন দেখছেন’ ইমরান খানের সমর্থকরা
এ ছাড়া এ আইনের আওতায় নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না, সে বিধানও রাখা হয়। তাই আইনটি সে সময় ‘দায়মুক্তি’ আইন নামে পরিচিতি পায়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার গত ১৮ আগস্ট আইনটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে। এরপর গত ২৭ আগস্ট আইনটির ৬(২) উপধারা ও ৯ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক ও আইনজীবী মো. তায়্যিব-উল-ইসলাম সৌরভ।

এ দুটি ধারাকে সংবিধানের ৭, ২১, ২৬, ২৭, ৩১, ৪২, ৪৪, ৪৬, ১৪৩ ও ১৪৫ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয় রিটে। গত ২ সেপ্টেম্বর রিটের প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট রুল জারি করেন।
আইনটির ‘পরিকল্পনা বা প্রস্তাবের প্রচার’ সংক্রান্ত ৬(২) উপধারা ও ‘আদালত ইত্যাদির এখতিয়ার রহিত করা’ সংক্রান্ত ৯ ধারা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও সংবিধানের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। আইনসচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) চেয়ারম্যানকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলেন আদালত। সেই রুলে চূড়ান্ত শুনানির পর ধারা-উপধারা দুটি অবৈধ, আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত এবং সংবিধানের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ঘোষণা করলেন উচ্চ আদালত।

আরো পড়ুনঃ চলতি মাসে নিয়োগ পেয়েছেন ১৩ শতাধিক সরকারি আইন কর্মকর্তা

আইনটির ৬(২) উপধারায় বলা আছে- ‘উপধারা (১)-এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রীর সম্মতি গ্রহণক্রমে যেকোনো ক্রয়, বিনিয়োগ পরিকল্পনা বা প্রস্তাব ধারা ৫-এ বর্ণিত প্রক্রিয়াকরণ কমিটি সীমিতসংখ্যক অথবা একক কোনো প্রতিষ্ঠানের সহিত যোগাযোগ ও দর-কষাকষির মাধ্যমে ওই কাজের জন্য মনোনীত করিয়া ধারা ৭-এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণে অর্থনৈতিক বিষয় বা সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রেরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে।’

আর ৯ ধারায় বলা হয়েছে, ‘এই আইনের অধীন কৃত, বা কৃত বলিয়া বিবেচিত কোনো কার্য, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, প্রদত্ত কোনো আদেশ বা নির্দেশের বৈধতা সম্পর্কে কোনো আদালতের নিকট প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।’

শেয়ার করুন

‘দায়মুক্তি’ ও ‘একক ক্ষমতা’ সংক্রান্ত দুটি ধারা-উপধারা অবৈধ : হাইকোর্ট

সময় : ০১:৫৭:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ‘দায়মুক্তি’ নামের ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন ২০১০-এর দুটি ধারা-উপধারা অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার এই রায় দেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ।

রিটের পক্ষে আদালতে রুল শুনানি করেন আইনজীবী শাহদীন মালিক। সঙ্গে ছিলেন মো. তায়্যিব-উল-ইসলাম।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনজুর আলম। অবৈধ ঘোষণা করা ধারা দুটি হচ্ছে— জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রীর একক ক্ষমতা সংক্রান্ত ৬(২) উপধারা এবং দায়মুক্তি সংক্রান্ত ৯ ধারা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনটি পাস করা হয় ২০১০ সালের ১২ অক্টোবর। জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুতের উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়াতে দরপত্র ছাড়াই প্রকল্প নেওয়ার সুযোগ রাখা হয় আইনে।

আরো পড়ুনঃ ট্রাম্পের জয়ে ‘স্বপ্ন দেখছেন’ ইমরান খানের সমর্থকরা
এ ছাড়া এ আইনের আওতায় নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না, সে বিধানও রাখা হয়। তাই আইনটি সে সময় ‘দায়মুক্তি’ আইন নামে পরিচিতি পায়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার গত ১৮ আগস্ট আইনটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে। এরপর গত ২৭ আগস্ট আইনটির ৬(২) উপধারা ও ৯ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক ও আইনজীবী মো. তায়্যিব-উল-ইসলাম সৌরভ।

এ দুটি ধারাকে সংবিধানের ৭, ২১, ২৬, ২৭, ৩১, ৪২, ৪৪, ৪৬, ১৪৩ ও ১৪৫ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয় রিটে। গত ২ সেপ্টেম্বর রিটের প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট রুল জারি করেন।
আইনটির ‘পরিকল্পনা বা প্রস্তাবের প্রচার’ সংক্রান্ত ৬(২) উপধারা ও ‘আদালত ইত্যাদির এখতিয়ার রহিত করা’ সংক্রান্ত ৯ ধারা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও সংবিধানের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। আইনসচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) চেয়ারম্যানকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলেন আদালত। সেই রুলে চূড়ান্ত শুনানির পর ধারা-উপধারা দুটি অবৈধ, আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত এবং সংবিধানের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ঘোষণা করলেন উচ্চ আদালত।

আরো পড়ুনঃ চলতি মাসে নিয়োগ পেয়েছেন ১৩ শতাধিক সরকারি আইন কর্মকর্তা

আইনটির ৬(২) উপধারায় বলা আছে- ‘উপধারা (১)-এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রীর সম্মতি গ্রহণক্রমে যেকোনো ক্রয়, বিনিয়োগ পরিকল্পনা বা প্রস্তাব ধারা ৫-এ বর্ণিত প্রক্রিয়াকরণ কমিটি সীমিতসংখ্যক অথবা একক কোনো প্রতিষ্ঠানের সহিত যোগাযোগ ও দর-কষাকষির মাধ্যমে ওই কাজের জন্য মনোনীত করিয়া ধারা ৭-এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণে অর্থনৈতিক বিষয় বা সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রেরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে।’

আর ৯ ধারায় বলা হয়েছে, ‘এই আইনের অধীন কৃত, বা কৃত বলিয়া বিবেচিত কোনো কার্য, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, প্রদত্ত কোনো আদেশ বা নির্দেশের বৈধতা সম্পর্কে কোনো আদালতের নিকট প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।’