১২:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৫৪২ কেজি ওজন কমালেন বিশ্বের সবচেয়ে মোটা মানুষ

রিপোর্টার
  • সময় : ০৬:৩২:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪
  • / ১১ বার দেখেছে

খালিদ বিন মোসেন শারি, সৌদি আরবের নাগরিক। বিশ্বের সবচেয়ে মোটা মানুষ হিসেবে তার নাম শুরুতেই ছিল। তার ওজন ছিল ৬১০ কেজি। সময়টা ২০০৩ সাল। শরীরের বাড়তি ওজনের কারণে খালিদ কোনো কাজই করতে পারতেন না। তার খাওয়া-দাওয়া, প্রাতঃকৃত্য সব কিছুই ছিল বিছানায়।

এত ওজনের কারণে খালিদের শরীরে দেখা দিয়েছিল নানান ধরনের শারীরিক জটিলতা। ধীরে ধীরে যা তাকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। এমন সময় খালিদকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে পাশে এসে দাঁড়ান সৌদি রাজা আবদুল্লা। এরপর একটি জটিল চিকিৎসা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় ৬১০ কেজি ওজনের খালিদের।

রাজা আবদুল্লা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে খালিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। সৌদির জাজেন থেকে চিকিৎসার জন্য তাকে রিয়াধের কিং ফাহাদ মেডিক্যাল সিটিতে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের বিশেষ ধরনের শয্যায় রাখার ব্যবস্থা করা হয় তাকে। যেহেতু ৬১০ কেজির খালিদের একচুল নড়চড়ার ক্ষমতা ছিল না তাই ৩০ জন চিকিৎসকের একটি দল গঠন করা হয় বিরল রোগের চিকিৎসার জন্য। ডাক্তারদের পরামর্শ মতো তৈরি হয় খাদ্যতালিকা বা ডায়েট চার্ট।

খালিদের শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে একটি গ্যাস্ট্রিক বাইপাস সার্জারি, বিশেষ ডায়েট, ব্যায়াম এবং প্রথম ছয় মাস ফিজিওথেরাপি দেওয়া হয়েছিল। যা তাকে তার ওজনের অর্ধেক কমাতে সাহায্য করেছিল। এরপরে অতিরিক্ত ত্বক অপসারণের জন্য তার উপর একাধিক অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল, যা অতিরিক্ত ওজন কমাতে আরও বেশি সাহায্য করেছে।

অস্ত্রোপচার এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে বিশেষ খাদ্যগ্রহণ ও শরীরচর্চার পাশাপাশিই চলতে থাকে মানসিক চিকিৎসাও। এই প্রক্রিয়াতেই ধীরে ধীরে ওজন কমতে থাকে খালিদের। শেষ পর্যন্ত ৫৪২ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলে মিরাকল ঘটান তিনি। বর্তমানে সুস্বাস্থ্যের অধিকারি খালিদ। জানিয়েছেন খোদ চিকিৎসকরাই। ‘ফিট ম্যানে’র ওজন এখন মাত্র ৬৩ কেজি ৫০০ গ্রাম।

 

চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, ওজন কমানোর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। এসময় বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা, বিশেষ করে মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। ওজন কমান্র ফলে শরীরের তরল, লবণ এবং ইলেক্ট্রোলাইটে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে পেশী ক্ষয়, প্রোটিন এবং ক্যালোরির অপুষ্টি এবং এনজাইম এবং খনিজগুলোর ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ফলে দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি, অলসতা, মেজাজ পরিবর্তন এবং সাধারণ দুর্বলতা অনুভব করেন। এজন্য খালিদকে মানসিক অবস্থা ঠিক রাখতে নানান থেরাপি দেওয়া হয়েছিল।

ট্যাগ :

শেয়ার করুন

৫৪২ কেজি ওজন কমালেন বিশ্বের সবচেয়ে মোটা মানুষ

সময় : ০৬:৩২:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪

খালিদ বিন মোসেন শারি, সৌদি আরবের নাগরিক। বিশ্বের সবচেয়ে মোটা মানুষ হিসেবে তার নাম শুরুতেই ছিল। তার ওজন ছিল ৬১০ কেজি। সময়টা ২০০৩ সাল। শরীরের বাড়তি ওজনের কারণে খালিদ কোনো কাজই করতে পারতেন না। তার খাওয়া-দাওয়া, প্রাতঃকৃত্য সব কিছুই ছিল বিছানায়।

এত ওজনের কারণে খালিদের শরীরে দেখা দিয়েছিল নানান ধরনের শারীরিক জটিলতা। ধীরে ধীরে যা তাকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। এমন সময় খালিদকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনতে পাশে এসে দাঁড়ান সৌদি রাজা আবদুল্লা। এরপর একটি জটিল চিকিৎসা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় ৬১০ কেজি ওজনের খালিদের।

রাজা আবদুল্লা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে খালিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। সৌদির জাজেন থেকে চিকিৎসার জন্য তাকে রিয়াধের কিং ফাহাদ মেডিক্যাল সিটিতে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের বিশেষ ধরনের শয্যায় রাখার ব্যবস্থা করা হয় তাকে। যেহেতু ৬১০ কেজির খালিদের একচুল নড়চড়ার ক্ষমতা ছিল না তাই ৩০ জন চিকিৎসকের একটি দল গঠন করা হয় বিরল রোগের চিকিৎসার জন্য। ডাক্তারদের পরামর্শ মতো তৈরি হয় খাদ্যতালিকা বা ডায়েট চার্ট।

খালিদের শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে একটি গ্যাস্ট্রিক বাইপাস সার্জারি, বিশেষ ডায়েট, ব্যায়াম এবং প্রথম ছয় মাস ফিজিওথেরাপি দেওয়া হয়েছিল। যা তাকে তার ওজনের অর্ধেক কমাতে সাহায্য করেছিল। এরপরে অতিরিক্ত ত্বক অপসারণের জন্য তার উপর একাধিক অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল, যা অতিরিক্ত ওজন কমাতে আরও বেশি সাহায্য করেছে।

অস্ত্রোপচার এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে বিশেষ খাদ্যগ্রহণ ও শরীরচর্চার পাশাপাশিই চলতে থাকে মানসিক চিকিৎসাও। এই প্রক্রিয়াতেই ধীরে ধীরে ওজন কমতে থাকে খালিদের। শেষ পর্যন্ত ৫৪২ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলে মিরাকল ঘটান তিনি। বর্তমানে সুস্বাস্থ্যের অধিকারি খালিদ। জানিয়েছেন খোদ চিকিৎসকরাই। ‘ফিট ম্যানে’র ওজন এখন মাত্র ৬৩ কেজি ৫০০ গ্রাম।

 

চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, ওজন কমানোর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। এসময় বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা, বিশেষ করে মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। ওজন কমান্র ফলে শরীরের তরল, লবণ এবং ইলেক্ট্রোলাইটে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে পেশী ক্ষয়, প্রোটিন এবং ক্যালোরির অপুষ্টি এবং এনজাইম এবং খনিজগুলোর ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ফলে দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি, অলসতা, মেজাজ পরিবর্তন এবং সাধারণ দুর্বলতা অনুভব করেন। এজন্য খালিদকে মানসিক অবস্থা ঠিক রাখতে নানান থেরাপি দেওয়া হয়েছিল।