জাতির পিতাকে ভালোবাসার দায়ে যদি চাকরি যায়, তবে তাই হোক: জবি সহকারী অধ্যাপক
- সময় : ১০:৪৮:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪
- / ৯ বার দেখেছে
এবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কামরুন্নাহার লিপি বলেছেন, ‘জাতির পিতাকে ভালোবাসার দায়ে যদি চাকরি যায়, তবে তাই হোক!’ গতকাল মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিকেল পৌনে ৬টার দিকে নিজের ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা লেখেন তিনি। ওই পোস্টের সঙ্গে একটি ফটোকার্ড যুক্ত করেন কামরুন্নাহার লিপি। ওই ফটোকার্ডে লেখা ছিল, ‘আগামীকাল বিকেল তিনটার মধ্যে ছাত্রলীগের সুপারিশে হওয়া ২৩টি নিয়োগ বাতিল ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক কামরুন্নাহার লিপির অব্যাহতিতে আল্টিমেটাম।’
জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কনফারেন্স রুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে হল উদ্ধার আন্দোলন ও প্রশাসনের শূন্যপদে অতি দ্রুত পদায়ন নিয়ে বৈঠক করেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে বিভিন্ন সময় উস্কানিমূলক পোস্ট ও শিক্ষার্থীদের সুইপার বলায় ওই শিক্ষককে বহিষ্কারের জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা।
সন্ধ্যা ৬টার পর ফেসবুকে আরেক পোস্টে কামরুন্নাহার লিপি লিখেন, ‘বেশ কিছু দিন যাবত আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে প্রতিনিয়ত জীবন নাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে থানায় জিডিও করেছি। আর একটি বিষয় পরিষ্কার করতে চাই, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটিই আমার একমাত্র আাইডি। যদি কেউ আমার নামে আইডি ক্লোন করে ফেসবুকে কোনো আপত্তিকর কিছু প্রচার করতে থাকে তার দায়ভার আমার উপর বর্তাবে না।’ এর আরেকটা পোস্টে লিখেন, ছাত্রছাত্রীরা সন্তানতূল্য। সুইপার বলে যে সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে তা অসত্য ও ভিত্তিহীন। সংবাদ মাধ্যমকে অনুরোধ করবো সত্যতা যাচাই করে সংবাদ পরিবেশন করুন। ওই পোস্টে একেকজন শিক্ষার্থী মন্তব্য করা শুরু করলে তার বিপক্ষে যাওয়া সব মন্তব্য ডিলিট করে দিয়ে মন্তব্য সংরক্ষিত করেন দেন।
একটি সূত্রে জানা যায় পেশায় শিক্ষক হলেও তার মূল উদ্দেশ্য ছিল সংসদ সদস্য হওয়া। তাই তিনি কোটা আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের সুদৃষ্টি পেতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করতেন। তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য নির্বচনী এলাকা ৮১ এর ঝিনাইদহ-১ আসনের মনোনয়ন কিনেছিলেন। শিক্ষার্থীদের মন্তব্য হলো কেউ যদি তার অনুপস্থিতিতে তার আইডি থেকে শিক্ষার্থীদের সুইপার বলে পোস্ট দেয় তাহলে তিনি কেন সেই পোস্ট টাইমলাইনে রাখবেন। আবার ইডিট করবেন কেন?
উল্লেখ্য, নিজ ফেসবুক আইডিতে (Kamrunnahar Lipi) গত বুধবার (৭ আগস্ট) জাতীয় সংসদ ভবনের দুইটি ছবি দিয়ে পোস্ট করেন এই শিক্ষিকা, একটি ছবি ছিল ৫ আগস্টের যেদিন বিক্ষোভকারীরা সংসদ, গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় দখল করে। দ্বিতীয় ছবিটি ছিল সংসদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ছবি। যেখানে একদম পরিষ্কার পরিছন্ন সংসদ ভবন দেখা যাচ্ছে। এই দুইটা ছবি দিয়ে প্রথমে তিনি ক্যাপশনে শিক্ষার্থীদের কটাক্ষ করে লিখেন, একজন সুইপারও এই কাজটি আরো সুনিপুণভাব করতে পারে। দেশ পড়া অন্য বিষয়!
এদিকে পোস্টটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপ ও বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত ফেসবুক পেইজে ছড়িয়ে পড়লে পরবর্তীতে তিনি ক্যাপশন সংশোধন করে লিখেন, এই মূহুর্তে ছাত্রসমাজের জন্য করণীয় হতে পারে অবর্ণনীয় জ্বালাও পোড়াও, নৃশংস হত্যাকাণ্ড, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস ইত্যাদির বিরুদ্ধে পূর্বের ন্যায় সোচ্চার হওয়া। দেশ অলরেডি কয়েক যুগ পিছিয়ে গিয়েছে।