কমলগঞ্জে টানা বর্ষনে ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা, পানি ব ন্দী মানুষ
- সময় : ১২:২১:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪
- / ১০ বার দেখেছে
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে গত দু’দিনের টানা বর্ষন ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধলাই নদীর বাঁধের উপর দিয়ে উপচে পানি বেরিয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ি ও নদীর উপচে পড়া পানিতে বন্যায় বিভিন্ন ইউনিয়নের শতাধিক বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। কমলগঞ্জ-আদমপুর সড়ক পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। পানিবন্দী রয়েছেন শতাধিক পরিবার। সবমিলিয়ে চরম জনদুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।মঙ্গলবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশনের অদূরে ধলাই রেল সেতু এলাকায় পানি বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জানা যায়, ধলাই নদীর কয়েকটি বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এগুলো ভেঙে বড় ধরণের বন্যার অশঙ্কা রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন ধলাই নদীর ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। উজানে ভারতীয় পাহাড়ি এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় সোমবার রাত থেকেই নদীর পানি বাড়তে শুরু করে।
একইসঙ্গে লাঘাটাছড়াসহ সবগুলো পাহাড়ি ছড়ার পানিও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারতের ত্রিপুরার গণমাধ্যম কর্মীরা জানান, ত্রিপুরা ও আসামে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ বৃষ্টির পানি আবার সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, ধলাই ও খুয়াই নদী দিয়ে প্রবাহিত হবে। ফলে ধলাই নদীতে পানি আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মঙ্গলবার উপজেলার আদমপুর ইউনিয়ন, পতনঊষারসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয়রা জানায়, ইসলামপুর ইউনিয়ন থেকে রহিমপুর ইউনিয়ন পর্যন্ত ধলাই নদীর ৫৫ কি.মি. এলাকার মাঝে বেশ কিছু স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। নদীতে আরও পানি বৃদ্ধি পেলে এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের বাঁধ ভেঙ্গে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের শতার্ধিক বাড়িঘর নিমজ্জিত হয়েছে এবং এসব এলাকার প্রায় হাজারো মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন। পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষিজমি। পানি বৃদ্ধি ও টানা বর্ষনে বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ প্রধান প্রধান কয়েখটি সড়ক পানির নিচে। কমলগঞ্জ পৌর এলাকার খুশালপুর, শমশেরনগর, পতনউষার, মুন্সিবাজার, আদমপুর, ইসলামপুর ও আলীনগর এলাকার বৃষ্টির পানি লাঘাটা ও খিন্নি ছড়ায় উপছে পড়ছে।
উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নে বনগাঁও গ্রামের বাসিন্দা কামরুল মাহমুদ জানান, ‘রাত থেকে আমাদের পুরো এলাকার মানুষ পানিবন্দী। বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। খুব কষ্টে জীবন যাপন করছি।’
কামদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হারুনুর রশীদ বলেন, ‘স্কুলের আঙ্গিনাল সকাল থেকে পানি প্রবেশ করছে। স্কুল আঙ্গীনায় ও স্কাসরুমে পানি প্রবেশের ফলে স্কুল ছুটি দিতে হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাকিব আহমেদ বলেন, ‘২০ আগস্ট সকাল ৯টায় ভানুগাছ রেলওয়ে সেতু এলাকায় ধলাই নদীর পানি বিপদ সীমার ১৪ সেন্টিমিটার ও দুপুর ১২টায় ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ধলাই নদীটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেয়ার সম্ভবনা রয়েছে স্বীকার করে বলেন, ‘নদীতে পানি বাড়ছে। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছি। কৃষিজমি সহ নিন্মাঞ্চল প্লাবিত আছে। সেসব এলাকার মানুষের সহযোগীতা করা হবে।