০৫:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফেনিতে দাদা-দাদির কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন নাঈম

রিপোর্টার
  • সময় : ০৫:২৭:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৩ বার দেখেছে

দাদা-দাদির করবের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গাজীপুরে পিকনিক বাসে বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যুবরণ করা ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির শিক্ষার্থী মোজাম্মেল হোসেন নাঈম।

রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের ফতেহপুর ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে দাদা-দাদির কবরের পাশে দাফন করা হয় তাকে।

এর আগে শনিবার (২৩ নভেম্বর) গাজীপুরের শ্রীপুরে বনভোজনে যাওয়ার পথে দ্বিতল বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যু হয় নাঈমের। এদিন রাত আড়াইটার দিকে নাঈমের লাশ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। সেখানে নিহতের স্বজনদের আহাজারিতে চারপাশ ভারি হয়ে ওঠে। আদরের সন্তানকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন মৃতের মা-বাবা।

শর্শদি ইউনিয়নের ফতেহপুর গোলাম নবী ভুঁইয়া বাড়ির মোতাহের হোসেন শাহীনের ছেলে নাঈম। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন মেজ। ২০১৯ সালে ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। এরপর ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন। তিনি তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন।

নাঈমকে একপলক দেখতে বাড়িতে ভিড় জমান আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও সহপাঠীরা। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে ফতেহপুর ভূইয়া বাড়িতে।

নাঈমের বাবা মোতাহার হোসেন শাহীন বলেন, আমার ছেলে অত্যন্ত নম্র-ভদ্র, বিনয়ী ও মেধাবী ছিলেন। দেশবাসীর কাছে ছেলের জন্য দোয়া চাই। আল্লাহ যেন আমার ছেলেকে শহীদি মর্যাদা দান করেন। পরিবার যেন এ শোক কাটিয়ে উঠতে পারে সেজন্য সকলের দোয়া চাই।

আরো পড়ুনঃ সোহরাওয়ার্দী-নজরুল কলেজে ভাঙচুর, পরীক্ষা স্থগিত

নিহতের চাচা মাওলানা মুফতি মোফাচ্ছের হোসেন মামুন বলেন, ফুলের সুগন্ধি ছড়ানোর আগেই ঝরে গেল। তাকে হারিয়ে শোক সইবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি। আমার ভাই-ভাবির স্বপ্ন ছিল তাকে দেশের সেরা প্রকৌশলী করা। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন স্বপ্নই রয়ে গেল। নাঈমের মৃত্যুর জন্য পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ দায়ী। তাদের অবহেলার কারণে এতো বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে।

আব্দুল্লাহ নামে তার এক সহপাঠী বলেন, বন্ধুদের মধ্যে নাঈম কিছুটা ব্যতিক্রম ছিল। সে সহজে সবার সঙ্গে মিশতে পারতো। এ ঘটনায় জড়িতদের তদন্তের মাধ্যমে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ৬টি ডাবল ডেকার বাস ও তিনটি মাইক্রোবাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যাচ্ছিলেন।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো আঞ্চলিক সড়ক ধরে রিসোর্টের দিকে যাওয়ার সময় উত্তর পেলাইদ গ্রামের উদয়খালী বাজারে পৌঁছালে বিআরটিসির একটি ডাবল ডেকার বাস পল্লী বিদ্যুতের তারের সঙ্গে লেগে যায়। এতে বাসটি বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে এবং বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

শেয়ার করুন

ফেনিতে দাদা-দাদির কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন নাঈম

সময় : ০৫:২৭:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

দাদা-দাদির করবের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গাজীপুরে পিকনিক বাসে বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যুবরণ করা ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির শিক্ষার্থী মোজাম্মেল হোসেন নাঈম।

রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের ফতেহপুর ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে দাদা-দাদির কবরের পাশে দাফন করা হয় তাকে।

এর আগে শনিবার (২৩ নভেম্বর) গাজীপুরের শ্রীপুরে বনভোজনে যাওয়ার পথে দ্বিতল বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যু হয় নাঈমের। এদিন রাত আড়াইটার দিকে নাঈমের লাশ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। সেখানে নিহতের স্বজনদের আহাজারিতে চারপাশ ভারি হয়ে ওঠে। আদরের সন্তানকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন মৃতের মা-বাবা।

শর্শদি ইউনিয়নের ফতেহপুর গোলাম নবী ভুঁইয়া বাড়ির মোতাহের হোসেন শাহীনের ছেলে নাঈম। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন মেজ। ২০১৯ সালে ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। এরপর ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন। তিনি তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন।

নাঈমকে একপলক দেখতে বাড়িতে ভিড় জমান আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও সহপাঠীরা। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে ফতেহপুর ভূইয়া বাড়িতে।

নাঈমের বাবা মোতাহার হোসেন শাহীন বলেন, আমার ছেলে অত্যন্ত নম্র-ভদ্র, বিনয়ী ও মেধাবী ছিলেন। দেশবাসীর কাছে ছেলের জন্য দোয়া চাই। আল্লাহ যেন আমার ছেলেকে শহীদি মর্যাদা দান করেন। পরিবার যেন এ শোক কাটিয়ে উঠতে পারে সেজন্য সকলের দোয়া চাই।

আরো পড়ুনঃ সোহরাওয়ার্দী-নজরুল কলেজে ভাঙচুর, পরীক্ষা স্থগিত

নিহতের চাচা মাওলানা মুফতি মোফাচ্ছের হোসেন মামুন বলেন, ফুলের সুগন্ধি ছড়ানোর আগেই ঝরে গেল। তাকে হারিয়ে শোক সইবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি। আমার ভাই-ভাবির স্বপ্ন ছিল তাকে দেশের সেরা প্রকৌশলী করা। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন স্বপ্নই রয়ে গেল। নাঈমের মৃত্যুর জন্য পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ দায়ী। তাদের অবহেলার কারণে এতো বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে।

আব্দুল্লাহ নামে তার এক সহপাঠী বলেন, বন্ধুদের মধ্যে নাঈম কিছুটা ব্যতিক্রম ছিল। সে সহজে সবার সঙ্গে মিশতে পারতো। এ ঘটনায় জড়িতদের তদন্তের মাধ্যমে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ৬টি ডাবল ডেকার বাস ও তিনটি মাইক্রোবাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যাচ্ছিলেন।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো আঞ্চলিক সড়ক ধরে রিসোর্টের দিকে যাওয়ার সময় উত্তর পেলাইদ গ্রামের উদয়খালী বাজারে পৌঁছালে বিআরটিসির একটি ডাবল ডেকার বাস পল্লী বিদ্যুতের তারের সঙ্গে লেগে যায়। এতে বাসটি বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে এবং বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।