চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হল ছাড়ার নির্দেশের প্রতিবাদে ছাত্রীদের বিক্ষোভ
- সময় : ০৭:৫৩:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪
- / ৫ বার দেখেছে
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ছাত্রীদের ও রাত ১০টার মধ্যে ছাত্রদের হল ত্যাগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেছেন ছাত্রীরা।
বেলা দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হলের সামনে ওই বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে অন্য হলের ছাত্রীরাও বিক্ষোভে অংশ নেন। রাত আটটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রথমে শামসুন নাহার হলের ছাত্রীরা হলের ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁরা হল ত্যাগের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছেন। এ সময় ‘মানি না, মানব না, হল ছাড়ব না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে শোনা যায় তাঁদের। পরে জননেত্রী শেখ হাসিনা, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও প্রীতিলতা হলের ছাত্রীরাও বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের দাবি কোনোভাবেই হলে সিলগালা করা চলবে না। তবে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলটি সিলগালা করা হয়েছে।
বিক্ষোভে থাকা পল্লী মজুমদার নামের এক শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলেন, ‘হল ত্যাগের এ সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। আমরা এ সিদ্ধান্ত মানব না। হল ত্যাগ করব না। আমরা এ সিদ্ধান্ত বাতিল চাই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ অহিদুল আলম বলেন, ‘সিন্ডিকেট থেকে বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত এসেছে। আমাদের এ সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা ছাত্রীদের বোঝানোর চেষ্টা করছি।’
রাতে সহকারী প্রক্টর হেলাল উদ্দিন বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ও উপাচার্যের বিবেচনাক্রমে হল ছাড়ার সময় বাড়ানো হয়েছে। আগামীকাল সকাল ১০টার মধ্যে সবাইকে হল ছাড়তে হবে।
এর আগে দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে গতকাল রাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটল ট্রেন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিলেও আজ আবার তা চালুর সিদ্ধান্ত হয়। বেলা আড়াইটা থেকে সেটি নিয়মিত সূচিতে চলাচল করছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে আবাসিক হল চালু আছে ১২টি। এর মধ্যে ছাত্রদের ৭টি আর ছাত্রীদের ৫টি। ছাত্রীদের হলগুলোতে সাময়িক বরাদ্দ দেওয়া হলেও ছাত্রদের হলে তা হয় না। ছাত্রদের সাতটি হলে সর্বশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ২০১৭ সালের জুনে। এর পর থেকে হলগুলো ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাই নিয়ন্ত্রণ করছেন। ১ হাজার ৮৮টি কক্ষের এ সাতটি হলের ১ হাজার ২০টিই তাঁদের নিয়ন্ত্রণে। বাকি কক্ষগুলোতে ক্যাম্পাসে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা থাকছেন। হল বন্ধ ঘোষণার আগেই ছাত্রদের এসব হলে থাকা শিক্ষার্থীরা হল ছেড়েছেন। কোটা আন্দোলন ইস্যুতে অনেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকেও সরে গেছেন। তবে ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী কিছু নেতা-কর্মী হলে অবস্থান করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রীদের পাঁচটি হলে চার থেকে সাড়ে চার হাজার শিক্ষার্থী থাকেন। তবে চলমান পরিস্থিতি ও বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি ঘোষণার পর বর্তমানে ৪০০-এর মতো ছাত্রী হলে রয়েছেন।